বক্ষপিঞ্জর (Thoracic case):
দেহের পশুকাগুলো একদিকে থোরাসিক কশেরুকা ও অন্যদিকে স্টার্ণামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যে খাঁচার মতো আকৃতি দান করে, তাকে বক্ষপিঞ্জর বলে। মানুষের বক্ষপিঞ্জর একটি উরঃফলক বা স্টার্ণাম (sternum), ১২ জোড়া পর্শুকা (ribs) এবং ১২টি থোরাসিক কশেরুকা নিয়ে গঠিত হয়।
স্টার্ণামঃ বুকের কেন্দ্রীয় সম্মুখ অংশে অবস্থিত চাপা অস্থিটি স্টার্ণাম। এটি অংশে বিভক্ত-উপরের ত্রিকোণাকার ম্যানুব্রিয়াম; মাঝের লম্বা দেহ; এবং নিচের ক্ষুদ্র জিফয়েড প্রসেস। ম্যানুব্রিয়াম দেহের সাথে সূক্ষ্মকোণ সৃষ্টি করে সম্মুখে প্রসারিত।স্টার্ণামের ঊর্ধ্ব কিনারায় একটি তথাকথিত জুগুলার নচ এবং পার্শ্ব কিনারায় ক্ল্যাভিকলের এবং ৭ জোড়া পশুকার খাঁজ থাকে।
পর্শুকাঃ পর্শুকা গুলো লম্বা, সরু, চাপা ও বাঁকা অস্থি। মানুষের দেহে ১২ জোড়া পর্শুকা থাকে। একটি আদর্শ পশুকা পশ্চাৎপ্রান্তে ফ্যাসেটবাহী মস্তক (ক্যাপিচুলাম), ক্রেস্টবাহী গ্রীবা, সংযোগী তলসহ টিউবার্কল এবং কোণ সৃষ্টি করে বাঁকানো দেহ নিয়ে গঠিত। মস্তক থোরাসিক কশেরুকার দেহের সাথে এবং টিউবার্কল দিয়ে একই কশেরুকার ট্রান্সভার্স প্রসেসের সঙ্গে যুক্ত থাকে । পর্ত্তকার সম্মুখ প্রান্ত তরুণাস্থিময়। প্রথম ৭ জোড়া পশুকা এদের তরুণাস্থি দিয়ে স্টার্ণামের সাথে যুক্ত থাকে, এগুলো আসল (প্রকৃত) পর্শুকা । বাকি ৫ জাড়া (৮ম-১২শ) স্টার্ণামের সাথে যুক্ত নয় বলে তা নকল পর্শুকা। ৮ম, ৯ম ও ১০শ পশুকা উপরস্থিত পর্শকার তরুণাস্থির সাথে একীভূত হয়ে কোস্টাল আর্চ (costat arch) নির্মাণ করে। ১১শ ও ১২শ পর্শুকা সামনে মাংসপেশিতে উন্মুক্ত থাকে। এগুলো সরল, ক্ষুদ্র এবং ভাসমান পর্শুকা নামে অভিহিত। প্রকৃত কশেরুকার দৈর্ঘ্য উপর থেকে নিচে ক্রমশ বাড়তে থাকে, কিন্তু নকল পর্শুকার ক্ষেত্রে ঘটে উল্টো ঘটনা
পর্শুকার অন্তর্তলের নিচের কিনারায় কোস্টাল খাদে স্নায়ু ও রক্তবাহিকা অবস্থান করে। প্রথম পর্শুকাজোড়ার উপরতলে পেশি সংযোজনের জন্য দুটি এবং সাবক্ল্যাভিয়ান ধমনি ও শিরা ধারণের জন্য দুটি খাদ থাকে। বহিঃ ও অন্তঃ ইন্টারকোস্টাল পেশি প্রতি দুই কশেরুকার মধ্যে তির্যকভাবে বিন্যন্ত । উপরে ও নিচে দুই কোস্টাল তরুণাস্থির মধ্যবর্তী ফাকা স্থানকে ইন্টারকোস্টাল স্পেস বলে।
বক্ষপিঞ্জরের কাজঃ হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কে সুরক্ষিত রাখে।
আরও দেখুন...